আমি আমাকে বন্ধক রেখেছি
অন্য এক পদ্ম বনে
সেই বনে যেতে হলে
আগে খুলতে হবে তোমার পায়ের নূপুর
তোমার কাঁকন জোড়া মাঝিকে দিলে
সে তোমাকে ওই দ্বীপে নিয়ে যাবে
আমার তা মনে হয় না।
(বরং) তাকে দিও তুমি
তোমার চোখের কাজল
তোমার কনটাক্ট লেন্সটা খুলে
কয়েক ফোটা চোখের জল
সেই চোখের জলে
তৈরি হবে স্বচ্ছ সরোবর
তবেই না মাঝি নৌকা ছাড়বে।
ঘাটে নামলেই দেখবে দুটো অজগর
তোমার কপালের টিপ খুললেই কেবল
তারা ভাগ হয়ে যাবে দুটি পথে
একটি পথ জুড়ে ছড়ানো নীল বুনো ফুল
দিগন্তে রংধনু
ঝুলে আছে অন্য মনস্ক হয়ে।
ও পথ আমার নয়।
বায়ে তাকালে আরেকটি পথ
শ্বেতজবা আর কাঁটা বিছানো
ও পথেই আমার বাড়ি
তোমার পায়ের নিচে ফুটছে কাঁটা
শ্বেত জবা হয়ে উঠছে রক্ত গোলাপ
ও পথে হাঁটতে হবে তোমায় অনেকটা পথ
তারপরেই রেল লাইন
ও পথে কোনো ট্রেন যায় না।
মাঝে মাঝে কোনো ক্লান্ত দীর্ঘশ্বাস
কু ঝিক ঝিক করতে করতে
ছুটে যায় রেল লাইন ধরে
তার কামরায় বিনা টিকে বসে আছে
শয়ে শয়ে পুরনো স্মৃতি।
ও স্মৃতি দেখে তোমার কান্না পাবে নিশ্চিত
যদি কান্না পায়
দু ফোটা চোখের জলে
তুমি পাবে দুটো টিকেট।
একটি টিকেটে তুমি চেপে বসবে স্মৃতির ট্রেনে
রেল গাড়ির ড্রাইভারের ঠিক পাশের সিটটায় বসে
তুমি তার কানে কানে
বলবে, তোমার আঁচলে লুকানো পিস্তুল
তোমার গায়ে অজস্র গোলা বারুদ
তবু যদি ড্রাইভার গাড়ি না ছাড়ে
তবু যদি গেটম্যান বাঁশি না বাজায়
তবু যদি না ওড়ে সবুজ পতাকা
তখন তুমি তোমার বুকের জামা খুলে
বের করো তোমার বুকের তিল
বুকের তিল খুলে বের কোরো
বুদ্ধ পূর্ণিমার চাঁদ
বুদ্ধ পূর্নিমার চাঁদ খুলে বের করো
একরাশ জোনাকি পোকা
তোমার চুলের সিঁথির মতো
অন্ধকারে বুকে চিড়ে
সেই জোনাকি পোকা তৈরি করবে একটি পথ
সেই সিঁথির কিংবা পথের শেষ প্রান্তে
এক প্রপাত
সেথায় আসলে তুমি ট্রেনের শিকল টেনে ধরবে
তারপর বিনা স্টেশনে নেমে পড়বে এক বিরাণ প্রান্তরে