কবিতা

একদিন তুমি বাড়ি থেকে পালাও

একদিন তুমি বাড়ি থেকে পালাও

একদিন তুমি বাড়ি থেকে পালাও

বাড়ির পেছনে যে হরিণ
তোমাকে উস্কানি দেবে বলে
প্রতি সকালে এসে শিং ঘষে যায় জারুল গাছে
সেই হরিণের দোহাই
একদিন তুমি বাড়ি থেকে পালাও

তোমার শশুরের কাশিটা বড্ড বেড়েছে
সিরাপের শিশি তো তার শিয়রেই থাকে
জানি ভর দুপুরে তিনি খুঁজে পান না তার চশমা
সিগারেটের পাইপ, বাসি খবররে কাগজ
তবু তুমি বাড়ি থেকে পালাও

তোমার স্বামীর ঘাড়ের ব্যাথা বড্ড বেড়েছে
অফিসে কাজের চাপ
এ বছরই তার প্রমোশন
ঘনিষ্ট কলারবোন
চেপে আছে তার ঘাড় ও গলায়
কিইবা তোমার
আছে করণীয়
এ অবেলায়
তবু তুমি বাড়ি থেকে পালাও

দেখো বাইরে কতটা ঝকঝক করছে রোদ্দুর
মাছেরা কেমন বয়ে বেড়াচ্ছে মধ্যদুপুর
শীতলক্ষ্যার জলে
দেখো পাখির বাসাটাও শূণ্য পড়ে আছে
জানি না কার খোঁজে
এ সময়
আকাশে উড়ে নিঃসঙ্গ এরোপ্লেন
তোমার বাচ্চারা
নিমগ্ন টিভি কার্টুনে
বলি, পালাবার এমন সুন্দর সময়
আর কখনোই পাবেনা
তুমি এ বেলা বাড়ি থেকে পালাও

আমার মার্লবোরের প্যাকেটে আছে ৪ টি সিগারেট
ডান পকেটে শুয়ে আছে গ্যাসপেটো লাইটার
হাতের আঙ্গুলে জমেছে অনেক ক্ষয় এবং
স্খলনের ইতিহাস
চোখের নিচে কালি
ভুল করে চশমা ফেলে এসেছি তামিমের বাসায়
তবু তুমি একবার বাড়ি ছেড়ে পালাও

জানি অনেক লোকনিন্দা হবে
ভাবীরা কান পাতবে রাতের আড্ডায়
প্রবীণেরা সিগারেটে টান দিয়ে বলবে,
আমাদের সময় এসব কিছুই ছিল না।
ছি ছিক্কারে ঘরের চিল উড়ে যাবে উদাম আকাশে
তবু তুমি বাড়ি ছেড়ে পালাও

যদি তুমি একবার পালাও
তোমাকে নিয়ে যাবো সার্কাসে
আমি তো কিছুই করবো না
কেবল দেখাবো সুচালো দড়ির উপর
কেমন সাবলীল দাঁড়িয়ে আছে ওই লোকটা
যেটা আমি কখনোই পারিনি
কখনোই পারবো না।